প্রচ্ছদ - সৌমেন মাজী       

 

ম্পা দ কী

মন...
যখন আছে। তার কেমনও আছে...

হুস করে বাতাস নিয়ে গেল তোমার গন্ধ।
কেউ পাচ্ছে কোথাও...। একবার ভাবো!

অপেক্ষা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছো যে!
যাবো?
উঁহু, যাবো না।
...
মনকেমনের নামতা ।। অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়

 

মনকেমনের কথা বললেই আমার গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ে। ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’-র গৌতম চট্টোপাধ্যায়। যে গান ৮০-র দশকে লোকে গ্রহণই করেনি সেই ‘মন আমার কেমন কেমন করে ও বধূরে’ ২০০০ পরবর্তী প্রজন্ম আপন করে নিল। আসলে ওই ‘মনকেমন’ শব্দটাই বড় আকর্ষণীয়।

এক মায়াবী জাদু নিয়ে আমাদের দেহের ভেতর বাসা বাঁধে আর এলোমেলো করে দেয় এই বেঁচে থাকা। 

কত কিছু নিয়েই যে মনকেমন করে। সেই ছোটবেলায় একটা বেলুনের জন্য মনকেমন করতো। মেলায় গেলেই লোভাতুর চোখে চেয়ে থাকতাম। তখন এত বেলুন গাড়ি ছিল না। আর এল ই ডি লাইটের বেলুন তো তখন কল্পনার বাইরে। সেইসময় মেলায় যাওয়ার আগের দিন তুমুল প্রত্যাশা নিয়ে থাকতাম, মন ছটফট করে উঠতো , আনচান করতো বেলুনটার জন্য।

বন্ধুর বাড়িতে দেখে আসা ছোট্ট খেলনা গাড়ির জন্য মনকেমন করতো। ইস! আমার যদি থাকতো এরকম একটা। বাবাকে আগে বলে রাখতাম ‘আমারও একটা চাই’। শীতকালে আমাদের এখানে খুব বড় মেলা বসে চার্চের মাঠে। বাবা মা দিদিভাইয়ের হাত ধরে যেতাম। এখন তো একদমই যাওয়া হয় না।  কিন্তু তখন সেই মেলার জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে থাকতাম। এভাবেই একবছর আমি আর দিদিভাই মেলায় হারিয়ে গেলাম। প্রচণ্ড ভিড়। কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না বাবা-মা’কে। আমরা দুজন গুটগুট করে হেঁটে এসে দাঁড়ালাম কেরানিতলার মোড়ে। আমার মনকেমন করছে খুব। আর যদি বাবা-মা’কে না খুঁজে পাই আমরা কীভাবে বাড়ি ফিরবো? ছোট্ট দিদিভাইয়ের ভয়ার্ত মুখের দিকে চেয়ে আনচান করছিলাম খুব। স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম দিদিভাইয়ের  হাতের মুঠোর মধ্যে চেপে ধরা আমার ছোট্ট হাত ঘামে ভিজে যাচ্ছিল।     

মনকেমনের সাথে কান্নার এক অদ্ভুত যোগাযোগ আছে। ঠিক যেমন হৃদয়ের সাথে লাবডুবের। বহু মনকেমনের সাক্ষী হয়ে থেকে যায় জল। আবার যেভাবে জল শুকিয়ে যায় সেভাবেই একদিন মনকেমনও শুকিয়ে যায় গ্রীষ্মের কাঁসাইয়ের মতো। কোথাও কোথাও ছোট্ট ডোবার মতো একটু জল রয়ে যায়, একটু মনখারাপ রয়ে যায়। তাকেই বহন করে ছায়া আর এগিয়ে যায় জটিলতার দিকে।

আবার অনেক মনকেমনে জল থাকে না, শুধু মরুভূমির মতো কিছু বালি উড়ে যায়। সারাদিন ঝড় হয়। প্রতিটি পাঁজরের ভেতরে ঢুকে বালি। জমে জমে পাহাড় হয়। তার উপর ঢেউ খেলে যায়। একটু একটু করে ধসে পড়ে। কে অস্বীকার করে এই বালির পাহাড়?

এই পৃথিবীতে প্রতিটি বৃক্ষ, প্রতিটি পাখির ভেতর প্রতি মুহুর্তে একটা করে ভূমিকম্প হয়। মন কেঁপে ওঠে। কেমন যে করে তা সবাই বোঝে? আসলে এ তো বোঝার নয়, অনুভবের। যখন আরেকটু বড় হলাম কোনো মানুষের জন্য এই ভূমিকম্প টের পেয়েছি কতবার। অস্থির লাগতো। আমার ঘরের পুরো দেওয়াল জুড়ে সৌরভ গাঙ্গুলি আটকে ছিল। যে ম্যাচে রান করতো না, কী মনখারাপ। যেন আমিই জীবনের কোনো উঁচু ডালে ঝুলে রয়েছি। নিচে নামার পথ নেই। ২০০০ এর ফুটবল বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল। আর্জেন্টিনার ওর্তেগা নেদারল্যান্ডের গোলকিপার ভ্যান ডার সর-কে মেরে লাল কার্ড দেখলো। তারপরেই বার্গক্যাম্পের গোল। মনকেমন এত তীব্র ছিল যে বাথরুমের নাম করে অনেক্ষণ দরজা লাগিয়ে বসেছিলাম।

এভাবেই কত যে মনকেমন ব্যাগে করে নিয়ে বয়ে চলেছি এই জীবনে। ক্রনিক অসুখের মতো এও আজীবনের সঙ্গী হয়ে থেকে গেছে। কিছু কিছু বেরিয়ে আসে চামড়া ভেদ করে , আর কিছু আজীবন হৃদয়ের পাঠশালায় বসে নামতা পড়ে যায় গুরুমশাইয়ের কাছে। এদের নিয়েই দিন হয়, রাত হয়, প্রতিটি মনকেমন মুখস্থ হয়ে যায়। তবু এরা পিছু ছাড়ে না। আমি দুলে দুলে পড়ি… পড়ে চলি…

একক কবিতা সন্ধ্যা



সহজ কবিতা সহজ নয় কঠিনও নয়



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...