প্রচ্ছদ -  সুকান্ত সিংহ      
 
স ম্পা দ কী য়
 
জীবন বিচিত্র এই
হাসি সুখ দুঃখ...
মরমে ধরতি হবে
অনুভূতি সূক্ষ্ম।
 
ভাষার কান্না কী
জেনেছ কি সত্যি?
শিকারস্বভাব ছাড়ো
...
ভাষাই তরণী ।। সুকান্ত সিংহ

 

এক পর্যটক গেছেন কায়রোর মিউজিয়ামে। গাইড তাঁকে সেই দেশের নানান প্রাচীন সামগ্রী দেখাতে দেখাতে নিয়ে এল বিখ্যাত ফারাও তুতেনখামেনের ব্যবহার করা কুড়ুলের কাছে। পর্যটক আপ্লুত। এমন একটি কুড়ুল, যেটি কিনা ব্যবহার করেছেন ফারাও তুতেনখামেন! তিনি গাইডকে জিজ্ঞেস করলেন-- আপনারা এত চমৎকার ভাবে কুড়ুলটা রেখেছেন কী করে? গাইড বলল-- স্যর, কুড়ুলের হাতলটা দশবার, আর ফলাটা পাঁচবার শুধু পালটাতে হয়েছে।

বাংলা ভাষা সেই কুড়ুল থেকে খুব দুরে নেই।

সত্যজিৎ রায় বাংলা ভাষা নিয়ে ঠিকই বলেছিলেন গুপিগাইনের কণ্ঠে-- এই ভাষা এমন কথা বলে, সকলেই বোঝে, উঁচু নীচু কিছু নেই। আমি স্বীকার করি। তবে তার সাথে আমি শুধু স্মরণে রাখি প্রফেট সুকুমার রায়কে -- খাচ্ছে কিন্তু গিলছে না। বাংলা ভাষা এখন এই জায়গায়। আমরা খাচ্ছি, কিন্তু গিলছি না।

জানি, পৃথিবীর যেকোনো জ্যান্ত ভাষা গ্রহণ-বর্জনের মধ্যে দিয়েই চলমান থাকে। অনেকদিন ধরেই চেয়ার-টেবিল একটি বাংলা শব্দ, খাতিয়ান একটি বাংলা শব্দ। তাদের জন্মস্থান যাই হোক, তারা আজ বাংলা শব্দ। মহাবিদ্যালয় শব্দটা গেটের উপরে অর্ধবৃত্তাকারেই রয়ে গেছে, আসলে ওটা কলেজ। যতই লোকে ক্যালকাটা-কে কলকাতা বলার জন্য জোর করুক, আসলে কলকাতা দাঁড়িয়ে আছে ক্যালকাটার কাঁধেই। নতুবা, কলকাতা আদপেই কলিকাতা ছাড়া কিচ্ছু নয়, ক্যালকাটা-কে বাদ দিয়ে সে গোবিন্দপুর সুতানুটির সহোদরা মাত্র। ওই যেমন বিখ্যাত বিজ্ঞাপনের ট্যাগ লাইন-- 'ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর', এখানে শুধু 'মোর' শব্দটি আছে বলেই ওটা ইংরেজি বাক্য হয়ে গেল না, তেমনই।

আমি ভাষাবিদ্ নই, ভাষা-ব্যবহারকারী। জন্মসূত্রে যে পরিবেশ পেয়েছি সেখানে বাংলা ভাষা প্রধান। আমার উর্দ্ধতন চোদ্দপুরুষ আমার মতোই এভাবে পেয়েছেন বাংলা ভাষাকে। এই ভাষা আমার মাতৃভাষা। এর প্রতি আলাদা দুর্বলতা থাকাই স্বাভাবিক। ভিন্ন ভাষার প্রতি ব্যক্তিগত কোনো ক্ষোভ নেই। সেগুলোও তো কারো না কারো মাতৃভাষা। যখন জোর করে কেউ কোনো ভাষা চাপিয়ে দেয়, ক্ষুব্ধ হই তখনই। ভাষার চলনে যে ভিন্ন ভাষা এসে পড়ে, তা ভাষাআবহাওয়ার একটি অংশ। তা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন এইসব চাপিয়ে দেওয়া দেখি, তখনই ক্ষুব্ধ হই। মনে রাখা ভাল, ভাষা শুধুই ভাবের বাহক নয়। ভাষা নিজেই একটি সভ্যতা। চাপিয়ে দেবার সময় তা আর সভ্যতা থাকে না, তখন সে একটা টুল। দখলদারির যন্ত্রাংশ।

একটা ভুল ধারণা খুব ঘোরে বাজারে, সেটা হল, চাপিয়ে দেওয়ার কাজটা শাসক করে শুধু। মোটেই তা নয়। এই কাজ একমুখী নয়। আমরাও করি। সেটা অনেকাংশে তথাকথিত স্মার্টনেস দেখাতে, কোথাও আবার অজ্ঞতা থেকে। পৃথিবীর যেকোনো ভাষা জ্যান্ত থাকে তাকে ব্যবহার করলে। সেখানে নজর না দিয়ে শুধুই একে তাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।

আমরা জন্মেই দুটো জিনিস সহজে পেয়েছি, খিদে আর মাতৃভাষা। এ দুটোর কোনোটাই আমৃত্যু আমাদের ছেড়ে যায় না।

এঁদের নমস্কার।

 

 

একক কবিতা সন্ধ্যা



সহজ কবিতা সহজ নয় কঠিনও নয়



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...