এই মুহূর্তে আমি অমৃতা নই, আমি মিলেভা মারিক, আলবার্ট আইনস্টাইন আমার প্রেমিক, তাকে আমি প্রেমপত্র লিখছি...
প্রিয় আলবার্ট,
জলতোয়ার নরম বুকে ফুটে উঠেছে পদ্মকুঁড়ি। গাঢ় নীল আকাশ, স্বর্ণাভ রোদ্দুর আর লিমাট নদীর সুগন্ধী বাতাসে ভেসে আসছে
নব বসন্তের পদধ্বনি। আজ বসন্ত জাগ্রত প্রতিটি হৃদয়-দ্বারে। নদীতে সেতুর বাঁধুনি, রঙিন উজ্জ্বল ফুলের বাহার, পাখিদের কলতান... এই হল পৃথিবীর ভূস্বর্গ সুইজারল্যান্ডের মনোহর শোভা। আকাশে যেন রামধনুর পত্রলেখা, জুরিখ হল সেই ভূস্বর্গ র নন্দন কানন।
এই সৌন্দর্য ছেড়ে, তোমাকে ছেড়ে হঠাৎ বাড়ি চলে এলাম মায়ের শরীর খারাপ। সুইস পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের একমাত্র ছাত্রী আমি। হাঙ্গেরী থেকে এসে খুব মনখারাপ লাগতো, আমার সার্বিয়ান ভাষা কেউ জানতো না। আমিই তোমাকে আবিষ্কার করলাম, সাতেরো বছরের ঝাঁকড়া চুলের কিশোর, আমিও সতেরো..।
অঙ্ক আর পদার্থ বিজ্ঞান তোমার আমার দুজনের খুব প্রিয়। অংকের অলৌকিক জগৎ আছে, আছে অতলান্তিক গভীরতা যাতে তুমি আমি ডুব দিয়েছিলাম।
আমি রোমান ক্যাথলিক, আর তুমি ইহুদি... কিছুতেই কেউ মেনে নেবে না। আমি ধনী কন্যা, তুমি প্রায় গরীব, কিন্তু ভালোবাসা সেই ভেদাভেদ ভুলিয়ে দিয়েছে। অংকের সুস্বাদু দিগন্তের হাতছানি আছে, আছে তোমার অমোঘ ভালোবাসা। বসন্তের আগমনী সংগীত শুনতে শুনতে বাড়ি ফিরে এলাম। সেদিন পূর্ণিমায় বেহালার সুরে সুরে আমার হৃদয় মথিত করে দিয়েছিলে, জানতে চেয়েছিলে সেই কথাটি...
প্রিয় আলবার্ট, হোস্টেলে ফিরে যাই, বেঠোভেনের ফি ফথ সিম্ফনি শুনতে শুনতে আমি জানাবো পৃথিবীর মধুরতম কথাটি....
একান্ত তোমারই মিলেভা