মনকেমনের গদ্য ।। দেবাশিস কুইল্যা

 

জানিস ,অনেকদিন লেখা হয়ে ওঠেনি তোকে। সময়ের প্রান্ত সীমায় আবর্তিত হতে হতে কবেই পিষে গিয়েছি খেয়াল করিনি। সেদিন হঠাৎ একটা কাজের সূত্রে তোর কথা মনে পড়ল। বলব না আছিস কেমন। আগের মতোই চেতনার অলিন্দে তোকে দেখে নিচ্ছি , হয়তো বা পড়েও । তুই সেদিন বলেছিলি পাশাপাশি ছন্দবদ্ধ পায়ে নদীও উতল হয়। ছলাৎ ছল ঢেউ যেদিন ভেজালো আমাদের, সেদিনই তো পড়ে নিয়েছিলি হৃদয়ের অক্ষরমালা। উপেক্ষা করার ধৃষ্টতা ছুঁতে পারিনি। তুই বলবি আবেগ। কেন রে ? সেদিনই তো একটা সরলরেখা দেখিয়ে বলেছিলি এই নদী । এই সেই। এর মধ্যে স্নান নিয়ে শরীর গহন হয়ে যেত ; বলে তুই ফিরে গেলি কাঁকররেখা ধরে। যে পথ গেছে বেঁকে জনঅরণ্যে। তারপর আর ফিরে দেখা হয়নি , যাওয়া হয়নি ওই পথে।
            ব্যাস , সেদিনই যে গেলি আর ফিরলিনা। এখানেই সব লেনদেন , কেনাবেচা , দেওয়া নেওয়া সব শেষ। তাই তো ? তারপর থেকেই সব আমার। আমাদের সময় পার করা কনে দেখা আলো , সন্ধ্যার আঁধারে আদর মাখানো ঝালমুড়ি , খুনসুটি, শীতের রাতে শিশিরের শব্দে আমাদের পরস্পর স্পন্দন , বসন্তের মাতাল শিহরণ , সব সব স্মৃতির অলিন্দে বন্দি হয়ে গেছে। ফেরে না আর। শুধু রয়ে গেছে তোলপাড় করা হৃদয়ের কাছে হৃদয় ফিরে আসার ডাক।
            এগুলো ছেড়ে সব নূতন করে শুরু করতে হল। আর সেখানে তুই কত সহজেই শুরু করে দিলি জীবন বেঁধে নেওয়ার গান। বোঝাতে পারব না কত কঠিন ছিল নূতন করে বাঁচার । নতুন করে শুরু করাটা কতটা কঠিন ছিল। তখনো সেই সময়টাকে ছুঁয়ে দেখি। শব্দরা অনুরণিত হয় আরো একটু স্পর্শে কাছে থাকার। সময় নির্মম নয় , নয় ঠকে যাওয়ায়। নির্মম বিজয়ী বেকারত্ব।
            মনে পড়ে তোর ! বৃষ্টিতে ভিজে একদিন বলেছিলি ; মানুষগুলোর মুখ পবিত্র বলে মনে হয়। তবুও কেমন লাগে যখন খাদ্য ও খাদকের চোখে আকাশ ও রোদ গা এলিয়ে দেয় শেষ উজ্জ্বলতায়। এসবের মাঝেও আমরা একটা পবিত্র পর্বের ভেতর দিয়ে এগিয়ে চলেছি দেবলোকের দিকে। সামনে পেছনে কোনো ভয় নেই। একা পৌঁছে যাওয়া যায় যেখানে দিগন্ত মিলেছে রামধনু আকাশের গায়। এখন বলতে পারিস ? কেন যে বাক্যের রূপ পেল না আমাদের সেই পবিত্র ভাবনার শব্দরা!
            তোকে খুব অসহায় লাগতো তোর সময় পার হওয়া অপেক্ষার গুণুনীতে। সেদিন মনে পড়ে তোর ? আমরা দাঁড়িয়ে সময় ধরব বলে। একটা ছিঁটে ফোঁটা রোদ পড়েছে তোর বাসন্তী রঙ শাড়ির আঁচলে। একটা হ্যাংলা মুখ হাঁ করে তাকিয়ে। এটা পছন্দ করতিস না কোনোদিন। একটা দেওয়াল তুলতে বলেছিলি ওখানে। না , পারিনি। কেউ কি পেরেছে কোনোদিন ?  তাই কিছুটা বিছুটি বাতাস সইতে হয়েছে আমাদের। এখনও ক্ষত রয়ে গেছে তার। তুই তো জানিস না সে কথা। সুযোগও আসেনি আর।
            এই তো সেদিন অপেক্ষা করছি কাউকে ছোঁব বলে। একটা চেনা মুখ পাশ দিয়ে চলে গেল না চেনার ভান করে। বলার কোনো সুযোগই দিল না কেমন আছ ? বলতে পার আমাদের সময়টা আছে কেমন ?

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...