জাদুকরের মায়া ।। অর্থিতা মণ্ডল

 

প্রকৃতির কত রূপ,কত গন্ধ। ঋতু ছুঁয়ে থাকে সেই সৌন্দর্যের রূপভেদ কে। মানুষ তো প্রকৃতিরই অংশ। তাই যাদের অনুভব করার ক্ষমতা বেশি, প্রকৃতির  রূপ পরিবর্তনে বদলে যায় তাদেরও মনের গতিপ্রকৃতি। অকারণ আনন্দে কখনো কখনো মন ভরে ওঠে প্রকৃতিরই আহ্বানে। আবার  অযথাই মন কেমনের সুর বেজে ওঠে নিশ্চুপে। এক একটা রোদ এসে যেন বলে যায় ‘চেনো আমায়?’এ এক নিঃশব্দ আকুতি। কত অচেনা এসে মিশে যায় এখানে। কত গভীর সেই হাহাকার।

আমিও তো পথ হাঁটি সেই চেনা-অচেনার ভিড়ে। কতদিন হল এসেছি পৃথিবীতে! আরও কত পথ হেঁটে যাব! সেই চেনা রোদের স্পর্শ গায়ে জড়ালে মনে পড়ে যায়,বাড়ির পেছনে মাটির দাওয়া। বকুল ফুল ছেয়ে আছে গাছে। তলার বাসি ফুল,নিস্তব্ধ দুপুর। মাটির পুতুল,খেলনাবাটি-রান্নাঘরে তুমুল ব্যস্ততা। রোদ পড়ে এলে খেলা শেষ হয়,আর রোদের বয়স বাড়লে আমিও ছেড়ে আসি অগুন্তি দিন। ঠাকুমার বড়ি দেওয়া শীতের বেলা ছাপিয়ে এখন কমলা রঙের রোদ্দুর কানের কাছে গুনগুনিয়ে ওঠে ‘দেখো,কতো পুরনো সংখ্যার আড্ডাতোমার ভেতর’। আমি দেখি। কথা বলি না। বিষণ্ণ মুহূর্তেরা দাউ দাউ জ্বলে। প্রথম কৈশোরে যেদিন অন্যরকম শরত এসেছিল একবার,এক কিশোর তার অনুক্ত ভালোবাসা অষ্টমী পুজোর অঞ্জলি হিসেবে সাজিয়ে রেখেছিল। কান পাতলেআশ্বিনের সকালে এমনই কত না বলা কথারা অতীতের থাকে ঘন হয়ে আসে।

শ্যাওলা জমে আছে কুয়োতলার পাড় ঘেঁষে অনন্ত প্রবাহের অব্যক্ত বিস্তৃতে। বিরাট বড়ো ভাঙা ভাঙা বাড়িটার আনাচে কানাচে সেই শ্যাওলার গন্ধ পাওয়া যায় গ্রীষ্মের দুপুরে। এদিকে পূর্ণিমার রাতে অনেক স্বপ্ন নিয়ে যে পরিরা এসে দাঁড়িয়ে ছিল তারা আজ অমাবস্যার গভীরে জোনাকি হয়ে ফুটে ওঠে। আমি হাঁটতে থাকি। সেই একা হাঁটার সঙ্গে রংমেলান্তির খেলা জোড়ে পারিপার্শ্বিক। প্রেমের রং,ভালোবাসার রং আমায় ঘিরে থাকে। সমস্ত হৃদয় ফুল হয়ে ফুটলে বড়ো সংগোপনে  ব্যক্তি জীবনে যুগ্মতার  অমরাবতী আসে।

অথচ রোদ্দুর কিংবা ঋতু ভরভরন্ত রূপের মাঝেও হোঁচট খায়। ব্যক্তি জীবনে সমষ্টির ছায়া পড়ে। আবারও  বিষণ্ণ রোদ বলে ওঠে,‘ দেখো, অসংখ্য মানুষের অতীতের বেদনা বর্তমানের ক্রুদ্ধতার সামনে এসে কেমন নির্বাক ছবি হয়ে গেছে’। আমি দেখি,হতবাক বিমূঢ় চোখের সামনে সমস্ত ঋতু যখন বীভৎসতার আগুনে পুড়তে থাকে বারবার,ঠিক তখনই ক্ষয় জেগে ওঠে প্রকৃতির বুকে। বোবা কান্নায় ফিকে হয়ে আসে প্রেমময়ী প্রকৃতির অপরূপ রং।সমষ্টির বিলাপে ব্যক্তিগত মনখারাপের জ্বর বাড়ে আর বড়ো দ্রুত ছদ্মবেশী জীবন চর্চায় নিভে যায় স্বতঃস্ফূর্ত জৌলুশ। কে তোমার বন্ধু ছিল? কে তোমার শত্রু ? ঝড়ের ভেতর প্রত্যেকেই বালি হয়,ধূসর রঙের বালি।

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...