ঘুপচি ফ্ল্যাটে আর পেরে উঠছি না। চারজনের পরিবার, ছেলেরা বড় হচ্ছে। কলকাতায় যখন থাকতেই হবে একটা বাড়ি কিনলে মন্দ হয় না। কাল বিকেলে পাড়ার চা'এর দোকানে কমলদাকে বললাম।
ব্যস। সক্কাল সক্কাল কমলদার ফোন, 'রেডি তো ? তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়। '
একটু ভয় করছিল আমার। ছাপোষা মধ্যবিত্তের পক্ষে কলকাতায় বাড়ি কেনাটা বাড়াবাড়ি নয়তো? সাধ আর সাধ্যের মধ্যে একটু ফারাক তো আছেই। তবুও মনের দ্বিধা দ্বন্দ্বের দরজা খুলে বেরিয়ে পড়লাম।
একটা বাইক আমরা দুজন। চড়ে চষে বেড়ালাম সারা দক্ষিণ কলকাতা। বেশ কয়েকটা বাড়ি দেখলাম। অসম্ভব সুন্দর সব বাড়ি, চোখ ধাঁধিয়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবে জানতে চাইলাম নিজের হাতে তৈরী এতো সুন্দর বাড়ি বিক্রি করছেন কেন?
আশ্চর্য!
সব বাড়ির মালিকদের একই গল্প। একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস।
তারপর, বৃদ্ধ কিংবা বৃদ্ধার হৃদয় বিদারী আক্ষেপ, 'কে দেখবে এতো বড় বাড়ি! বয়স তো অনেক হল। আর পেরে উঠছি না। ছোট্ট একটা ফ্ল্যাটে চলে যাব। আগে আত্মীয়, বন্ধু বান্ধব সবাই আসত। আজকাল আর কেউ আসে না। ছেলে বিদেশে, মেয়ে ব্যাঙ্গালোরে। ওরাও আর কেউ আসবে না কোনোদিনই।'
বিশ বছর পরের ঘটনা ভেবে আমার আর বাড়ি কেনা হল না।