বাইরে বৃষ্টির সঙ্গে তাল মিলিয়ে, সাউন্ড সিস্টেমে “ভরা বাদর, মাহ ভাদর ” বেজে যাচ্ছে অবিরত । পাশে গল্পগুচ্ছ উঁকি দিচ্ছে, তিতাস শুয়ে শুয়ে ভাবছে ফেলে আসা কথা। আর দু মাস পরে , নতুন ভালোবাসা আসতে চলেছে ওর আর অর্নবের জীবনে। অর্নব কবিতা লেখে ,সমাজসেবক ,ওরা দুজনেই শিক্ষক। সাত – সাতটা বছর আগে , লাইব্রেরির নির্জনতায় প্রথম আলাপ, তিতাস ও অর্নবের । তারপর, ইউনিভার্সিটির ক্যান্টিন , ময়দানের বিকেলের লাল- চা, ধর্মতলার সেলের বাজার, অথবা আকাদেমির সময় গুলো ধীরে ধীরে ওদের এগিয়ে দিয়েছিল, ‘হাজার বছর ধরে’ পথ হাঁটার দিকে। অর্নব গড়ের মাঠে মার্ক্সবাদ শোনাত, তিতাস কে, চিৎকার করে শক্তি চট্টোপাধ্যায় পড়ত উদাত্ত কন্ঠে , আর তিতাস হারিয়ে যেত সেই অগোছালো সময়ের স্রোতে।
আজ নারীদিবসে বক্তৃতা দিতে যাবে অর্নব তার প্রস্তুতি চলছে পাশের ঘরে। ড্রয়িং রুমে ফোনটা বেজে যাচ্ছে , তিতাসের কানে হঠাৎ ভেসে আসে, অর্নব কাকে যেন ফোনে বলছে , “আমি ছেলেই চাই। আমার এত সম্পত্তি কে পাবে , শেষ বয়সে দেখার জন্যও ছেলে দরকার হে। ক্রিকেট খেলবে কোহলির মত , ভারত কাঁপাবে।” তিতাস চুপ হয়ে যায়, এতগুলো বছর ধরে বুনতে থাকা স্বপ্ন গুলোর পথ বদলে যেতে থাকে , নিঃশব্দে গর্ভের কাছে হাত এনে বলে , তুই যেন মেয়েই হস। নাম রাখব মেঘ। উড়িয়ে দেব দুঃখকথা তোর নামে। ভেসে বেড়াবি আমার সারাটা আকাশ জুড়ে।