বাঘা - জ্বীন ।। এস. কবীর

Unpublished


বাঘা - জ্বীন 
এস. কবীর

সালটা ১৯৯০ কি ৯২ হবে। তখন গার্ডেনরিচের এই বটতলা - রেললাইন এলাকাটা এতো
জমকালো ছিল না। গঙ্গার ধারের উৎসৃষ্ট চটকল হতে সন্তোষপুর স্টেশন পর্যন্ত
রাস্তাটা তখনও পিচের হয়নি। ইতি উতি ঝোপ-ঝাড় আর পরিত্যক্ত রেল লাইন দেখা যেত।
মানুষের মধ্যে এতো ব্যস্ততও ছিল না তখন। দর্জির কাজ করে অঢেল সময় থাকত
মানুষের হাতে । গোরা দাদুর ও তাই। সুতরাং প্রায়শই কাজ করার পর মেটিয়াব্রুজে
নাইট শো তে সিনেমা দেখতে যাওয়া টা যেন তার নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল । শো
ভাঙ্গার পর শানায়াজ্ হোটেলে নিহারি রুটি খেয়ে বাড়ি ফিরতে গভীর রাত হয়ে
যেত।সৌমদর্শন - তরতাজা যুবক গোরা দাদু পরের দিন সেলাই কারখানায় কাজ করতে করতে
আগের দিনের সিনেমার খোশ গল্প সবাইকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে শুনাতো। একই কারখানায়
কাজ করতো সুবিদ পাড়ার বাহারুদ্দিন সেখ। বযস কম, বেশ লম্বা - চওড়া, শয়তানি
বুদ্ধিতে ঠাসা, ভয-ডর ছিল না বললেই চলে। তাই সবাই তাকে 'বাঘা' বলেই ডাকতো। সে
একদিন হা- করে গোরা দাদুর গল্প শুনতে শুনতে জিজ্ঞেস করলো-"জাদু (কাকা), তুমি
এতো রাতি বাড়ি ফিরো, তোমার ডর লাগিনি? শুনেচি ঐ গোরস্থান পেরিন মুদির দুকানির
পাশি সুবিদদের যে খাটা পায়খানটা আছি-সেখানি নাকি জ্বীন - খোপিশ্ সব আছি?" বেশ
তাচ্ছিল্যৈর সুরে গোরা দাদু বলল-"আমাকে ভয় দেখাচ্ছিস বাঘা? দেখেছিস আমার
ছাপ্পান্ন ইঞ্চি বডি? আমি দুবেলা মুগুর ভাজি, প্রতি বুধবার আখড়ায় যায়
কুস্তি লড়তে। আমাকে দেখল না তোর ঐ জ্বীন - ফিন সব দৌড়ে পালাবে। ধরতে পারলে
না আমিই ওদের ঘাড় মটকে দেবো। বাঘা মৃদু ঘাড় নেড়ে বললো-" সি তো বটিই! "এর
বেশ কয়েক দিন পরে দেখি সকাল বেলায় পাড়াতে বেশ হট্টগোল হচ্ছে। গোরা দাদুর
বাড়ির সামনে সব জটলা করেছে। দাদুর নাকি ভীষণ শরীর খারাপ। কাল রাতে যখন সিনেমা
দেখে ফিরছিল তখন ঐ খাটা পাযখানাটার কাছে জ্বীন দেখেছে! কবরস্থানের পাশে ছাতিম
গাছটার গোড়াটা থেকে সাদা কাফন পরা একটা লাশ গড়াতে-গড়াতে কোণার ঐ পাযখানাটার
কাছে গিয়ে একেবারে গোরা দাদুর পায়ে গিয়ে ঠেকেছে! গোর দাদু 'বাপরে' বলে লাশটা
টপকে পালাতে গেলে - লাশ টা যেন তার দু'পা আঁকড়ে ধরে! আর জ্ঞান ছিলো না। এরপর
গোরা দাদু আর কোনদিন নাইট শোতে সিনেমা দেখতে গেছে বলে শুনিনি। তবে বেশ কিছুদিন
পরে জানতে পারলাম, এই ভয়ানক কান্ডটা নাকি বাঘাই ঘটিয়েছে। সেই সাদা থান পরে
কবরস্থানের ছাতিম গাছটার গোড়ায় গোরা দাদুর জন্য অপেক্ষা করছিল।

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...