অমিতাভ মৈত্র র এক গুচ্ছ কবিতা
অনুতাপ
জামার বোতাম শ্বাস নিচ্ছে এখনও
তার মানে আমিও বেঁচে আছি।
ব্যাগ ঝাঁকিয়ে ঝনঝন করে ডিভিডেন্ট
চাইছে কন্ডাকটার
আট মিনিট অনুতাপের জন্য।
চোখ ঘষতে ঘষতে উঠে আসছে ধুলোমাখা
সাদা জুতো
কস্মিনকালেও যার এয়ারহর্ণ নেই।
ব্যাগ ঝাঁকিয়ে ঝনঝন করে ডিভিডেন্ট চাইছে
কন্ডাকটার
আট মিনিট অনুতাপের জন্য।
আত্মশুদ্ধির ঘরের দেয়াল
এমন জীবানুশূন্য করে নিওনা নিজেকে, যাতে মনে হয়
সাদা সাবানের ওপর কালো ফিনাইল দিয়ে
লেখা হয়েছে তোমাকে
ঈশ্বরের হাতে, ঈশ্বরের লেখার খাতায়
আত্মা ও শরীর
সারাজীবন বেজে যাওয়া ঘন্টা
আজ নিচুমুখে এসে দাঁড়িয়েছে তার অবসানে
আর তাকে অগ্রাহ্য করে সীমা ছাড়ানো স্পর্ধা নিয়ে
শক্ত ছাই নিজেকে খুলে নিচ্ছে চুরুট থেকে
সম্পর্ক
সমস্ত বন্ধন শেষ করে দেখবে সবকিছু এখনও
একইরকম
কোথাও কোনো দাগ নেই।
আর বাহাত্তর বার গুলি করার পরেও বেড়ালটাকে
একইভাবে বসে থাকতে দেখবে টুপির ওপর
যেন ইলেকট্রন রশ্মি দিয়ে ইলেকট্রনকে বিশ্লেষণের চেষ্টার
পরিণতি জানে সে।
প্রতিরোধ
বুড়ো সাপ মাটির অনেক নিচ থেকে
জাঞ্জিবারের স্বপ্ন দেখছে।
নিয়তি নির্দিষ্ট স্বপ্ন–যা করুণ, বিয়োগান্তক,
হৃদয়বিদারক।
একবার সে যন্ত্রণায় চিৎকার করে বলে উঠেছিল–
‘‘হা ঈশ্বর, আর কতদিন!’’
এরপরই রাগে আত্মধিক্কারে
নিজের জিভ সে কেটে ফেলে দেয়।
সম্পর্ক
খুব ক্লান্ত স্প্যানিশে নৌকাটি তখন বলছিল
গ্লুকোমা আর রক্তচাপে কাহিল সমুদ্রের কথা
যেন লেবু মেশানো কালো চায়ের জীবন ক্রমশ স্বচ্ছ হয়ে উঠছে
অনেকটা পথ দৌড়ে আসার জন্য
ওষুধ কেনার জন্য টাকা চাইছিল কুণ্ঠার সঙ্গে চোখ নিচু করে
অভিজ্ঞতাবাদ
সাদা আইসক্রিমের সব বুড়োই স্পেন পর্যন্ত গিয়ে ফুরিয়ে যায়
হাত ও হাতকাটা জামা শূন্যে ভাসছে আর চিন্তা করছে পরস্পরের জন্য
এটা অদ্ভুত যে রোদ কোনো বাড়ির বাইরেটাই শুধু
বুঝতে পারে মনে রাখতে পারে
কিন্তু জানেনা জলের ওপরের রবিবার আসলে কখনোই কোনো রবিবার নয়
জরথুষ্ট্র বলেছেন
হ্যাঁ, নিকৃষ্ট একজন স্থপতিও ছাড়িয়ে যায়
শ্রেষ্ঠ কোনো মৌমাছিকে
যখন প্রথমে সে বাড়িটা সম্পূর্ণ করে নেয় তার চিন্তায়
তারপর মাটির ওপর তৈরী করে তাকে
কোয়ারান্টাইন ও হেনরি
যার আবরণই নেই হেনরি তাকে নতুন করে
নগ্ন করতে যাবে না
একই সাথে, যে নগ্ন তাকে আবৃত করার চেষ্টাও আর
করবে না সে