অস্থির সময়টা শুরু হয়েছে এ বছরের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই। চিন, জাপানের মতো দেশগুলো কিংবা ইতালি বা ইরান কোভিড-১৯ এর বিষাক্ত ছোবলের আওতায় চলে এসেছে, ভারতের তখনও নির্বিকার থাকাটা একটু সাহসী মনের পরিচয় হলেও আশ্চর্যের। দেশের সীমান্তগুলো তখন থেকেই যদি আর একটু নজর দিত সরকার, আন্তর্জাতিক বিমান নামার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করত, আজকের ভয়াবহতার করাল গ্রাসটা এভাবে আমাদের দেখতে হতো না।
আরো একবার প্রমাণিত হল, পরিস্থিতি মানুষকে শিক্ষা দেয়। জনতা কার্ফু এই শিক্ষারই একটা অঙ্গ। বা বলা যেতে পারে সূচনা। যার পরবর্তী পদক্ষেপ লকডাউন। মানে কার্যত গৃহবন্দি। কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র দাবি করেছিলেন, ' গোটা মানুষের মানে চাই। ' বলা বাহুল্য মানুষের মানে খুঁজতে আর মনুষ্যত্বের দাম দিতেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত।অস্বীকার করব না, কুর্নিশযোগ্য সিদ্ধান্ত। মানুষের স্বার্থে, সুস্থ জীবনের লক্ষ্যে দল বর্ণহীন এই পদক্ষেপে আখেরে মানুষেরই কল্যাণ।
সম্মিলিত প্রচেষ্টা আর হিতকর উদ্দেশ্য যখন কোনো জনজাতির ওপর ছত্রছায়া হয়ে বিস্তার লাভ করে,তখন তা মানুষের কাছে স্বপ্নের দেশ মনে হয়।
করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক সাধারণ মানুষের চোখের ঘুম কাড়ছে ঠিকই,মানুষ স্বস্তিও বোধ করছে।
সারাজীবনের জন্য এ স্বস্তি সবাই আশা করে। এ ইচ্ছে সকলের বুকের মধ্যেই গোপনে গোপনে বেড়ে চলে। লাল, সবুজ, গেরুয়ার বাইরেও যে একটা রঙ থাকে, যার নাম মানবতা, সেটাই হয়ে উঠুক আগামি পৃথিবীকে সুস্থ রাখবার ওষুধ। কেননা জীবনদায়ী ওষুধ জীবনকে শুধু দানই করে, প্রতিদানে কিছু আশা করে না।
অরাজনৈতিক এই উদ্দেশ্য দলতন্ত্র ও অসাম্যকে পেছনে ফেলে প্রাণের কাছে পৌঁছোক,এই আকাঙ্ক্ষা রাখব।