iswarchandra vidyasagar

Mohool Potrika
Login Here  Login::Register

WhatsApp Image 2020 06 21 at 22212 PM

একক কবিতা সন্ধ্যা ।। তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়
 
WhatsApp Image 2020 06 21 at 21746 PM
 
তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়
মনে করুন লকডাউন সিরিজ
 
 
(১) 
 আমার এই নেহাত বেঁচে থাকা,
কেউ কি এর উপর সামান্য চিবুক রাখবে? 
 তখনি মাত্র ফুটে উঠবে তারা
জোনাকিরা ভেসে যাবে প্রকৃত জ্যোৎস্নায়।    
আমার এই নেহাত বেঁচে থাকায়,
কেউ কি আমাকে এক ঘটি জল আর
 দুটো বাতাসা দেবে?
 
 
(২) 
সঙ্গে সঙ্গে বলো-
'যা জমে থাকছে পাতায়!
হয় ঘুম আসছে কিংবা তুলে নিচ্ছে 
খোক্ষস সম্রাট।'
জানো তো,
ইচ্ছাকৃত আগুন হলে,
তোমার প্রেতবাস নিশ্চিত। 
 
 
(৩) 
একটা প্রেতজন্ম 
আরেকটা ঈশ্বর! 
ঠিক করে বলো, 
বসার ঘরে কোনটাকে সাজাবে যত্নে?
 
 
(৪) 
নাহয় অরণ্যবাসে কোকিল ডাকে না এখন!
নাহয় নির্মেদ নদী বলেই দিয়েছে-
'জল নিলে 
স্নেহ তোমাকে দিতেই হবে।'
তাই বলে, একবারও পিছনে তাকাবে না?
মাপবে না দূরত্ব? 
 
 
(৫) 
যা লিখে রাখলাম 
ধরে নাও মৃত্যু উপহার। 
পাহাড়ের খাদে আছে ঘুমন্ত শহর। 
শহরের দিকে যে রাস্তায় ছুটে গেল,
কবির দোহাই, সে নিজেও গন্তব্য ভুলেছে।
 
 
 
ধ্যান
 
 
কতটুকু রেখে যেতে পারলাম মানুষের জন্য।
নিজের দুঃখ, সুখ, কাঠিন্য পেরিয়ে
কতটুকু স্থির বিশ্বাস ছড়াতে পারলাম! 
প্রকৃত মরীচিকা আর কৃত্রিম অভিমান পোষা হৃদয় 
অবাধ্য থেকে অবাধ্যতর হল,
খাঁচার দরজাটিকে আনমনে কেউ খুলে রেখে গেছে বলে...
অথচ ঈশ্বরী চিবুক চাইলো না হাত...
ভালোবাসা বিনিময় চাইলো না। 
হে নির্মোহ, হে সু,
তুমি যদি জানো,
 কোথায় পৌঁছালে সমস্ত অসুখ সেরে যাবে, 
জানিয়ো...
মানুষের জন্য নাহয় সেটুকুই হবে আমার পরোক্ষ উপহার।
 
 
 
নাম
 
 শৈল্পিক আঘাতের অপেক্ষা করতে করতে ক্ষয়ে যাওয়া শিলাকে কথা দিয়েছিলাম-
 তোমাকে আমি খুঁজে বের করবোই।
 স্বপ্নের ভেতর তাই এতক্ষণ বসে থাকা। 
জুনিপার গাছের নীচে তুষারকন্যার শরীর থেকে খসে পড়া পোশাকের ছটায়
 চোখ ঝলসে যাচ্ছে,
 তবু বসে আছি!
দৈত্য -দানব এখন আমার প্রতিবেশী! 
শ্বাপদসঙ্কুল অরণ্যে, 
গুহার অন্দরমহলে বেঁচে থাকার জন্য আমাকে এখন আর আগুন জ্বালাতে হয়না...
সবাই, ওরা সবাই কাতর - তোমাকে খুঁজে দিতে...
আর তুমি,তুমি কিনা পালিয়ে বেড়াচ্ছ এ সমুদ্র থেকে ও সমুদ্রে...
আফ্রিকান লোককথা থেকে ভারতীয় রূপকথায়...
তুমি জানো না, 
একা আমি কথা দেওয়া আঁকড়ে বসে আছি...
এখানে, পাথর নেই, কাঁকর নেই,মাটি নেই,জল নেই !
অনাগত সন্তানকে দেওয়ার মতো নামও নেই...
 
 
 
সূর্যমুখী দেশের মেয়ে
 
আরেকটু এগিয়ে গেলে
আমাদের পাড়া!
গ্রাম শেষ...
সাজানো মুনিয়ারঙ
ঝলমলে,
সূর্যমুখী দেশ?
ও সূর্যমুখী দেশের মেয়ে,
ভালোবাসা ছলাৎছল নদী...
তোমাদের নামে নামে মৃগনাভী ছড়াতে প্রস্তুত...
যেয়ো না...
যাওয়ার পথে ফোস্কার তীব্র করুণ আঁচে,
ডাকা তো আধেক ঘুমে চাপা পড়ে যায়!
পুরুষেরা অনাহারে বাঁচে...
 
 
 
পাহাড়জন্ম
 
মাথার ভেতর থেকে
পুরনো দিনের এস্রাজ,
অন্ধকার সন্ধ্যায়
ধূমায়িত নিবিড় হয়ে ওঠে।
তোমার গলার মতো ঠান্ডা হাওয়া
শীতলতম সম্পর্কপ্রদেশ চায়...
অথচ আগুন দেখবো বলে,
সেই কবে থেকে
আমি এই গোপন পাহাড়জন্ম ছেড়ে যেতে পারিনি...
 
 
 
নস্টালজিয়া
 
নস্টালজিক বিকেল মানে,
তোমার কাছে যদি আধভেজা ছাদ
আর না ফোটা কতগুলো কুঁড়ি হয়
তবে আমি তোমাকে নিয়ে যেতেই পারি মৃত্যুর দিকে।
     গ্যাসভর্তি বেলুন গাড়ির পেছনে,
সদ্য হাসতে শেখা ওঠা কিশোরীর পেছনে,
আলপনা আঁকা কুঁড়ে ঘরটির পেছনে ছুটতে ছুটতে 
যে মৃত্যুর দিকে চলে গিয়েছে পৃথিবী পৃথিবী মানুষ।
 
 
 
 
  
 
 
লেখকের অন্যান্য লেখা

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...