করোনা এক নতুন সংকেত। ধ্বংস হবে পৃথিবীর কিছু মানুষ। সবাই কথার উপর কথা চাপিয়ে দোষারোপে ব্যস্ত। এটা হলো না–ওটা হলো না। এটা হলে ভালো হতো। নতুন এক ভারতের ছবি। ঈশ্বরের শরণাপন্ন হওয়া, কত কী।
ভারতে চিরদিনই দুটো ভারত ছিল। সবাই জানতাম সেই দুই ভারতের ছবি। সম্পদশালী ভারত আর সম্পদহীন ভারত। একটাতে সমাজের উচ্চবিত্তরা আসীন, অন্যটাতে দরিদ্র খাদ্যহীন বস্ত্রহীন বাসস্থানহীন। দেশের আইন সবার জন্যই এক, দুই ভারতে। একদল আইনকানুন জানে আবার আইনকে বোকা বানাতেও জানে। অন্য ভারতে আইনের কিছুই জানা নেই।
দ্বিতীয় ভারতে মোট জনসংখ্যার ২১.৯২% দরিদ্র। নিত্যদিন তাদের অভাব। প্রথম ভারতে স্বাচ্ছন্দ্য থাকলেও করোনাতে তারা ভীত সন্ত্রস্ত, বিদেশ থেকে যারা করোনাকে নিয়ে এসেছে। দ্বিতীয় ভারতের মধ্যে কিন্তু ভয় নেই; না করোনাতে না অভাবের। এটা তাদের কাছে নতুন কিছু নয়। দরিদ্র মানুষকে নিয়ে গান হয়, কবিতা হয়, উপন্যাস হয়, সিনেমা হয়। এসবের নির্মাতারা পুরস্কার পান। কত গবেষণা হয়। কিন্তু দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব হয় নি!
লকডাউনে সমস্যায় নাগরিক জীবন। অসহায় মানুষের পাশে থাকতে চাইছে মানুষ। শহর গ্রাম পাহাড় জঙ্গল সর্বত্র ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যে যার সাধ্য মতো পাশে দাঁড়াচ্ছে। এই সমগ্রের চিন্তা যেন দীর্ঘদিন ধ্বনিত হয় আমাদের দেশে।
আর দোষারোপ নয়। সময় আছে, সময় আসবে নতুন ভাবে কথা বলার। তখন আমরা সাহস দেখাবো ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার। এখন সব অহংকার ত্যাগ করে, অতীতে ও বর্তমান দ্বন্দ্বের কচকচানি না করে সবাই বাঁচার ও বাঁচানোর রাস্তা খুঁজতে হবে। সংবেদনশীল মন তৈরী হোক এই সংকটে। সংকট মুক্তিতে নিয়োজিত মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগরিত হোক। এ লড়াই একার নয়। একমাত্র সকলের চেষ্টাতেই এই সংকটকাল থেকে বেরিয়ে করোনা মুক্ত জীবন আমরা পেতে পারি।