logo corona

পুলিশ তুমি দলদাস ও ঘুষখোর !।। উমাশঙ্কর নিয়োগী।

 

 

বাড়িতে নিত্য নতুন রান্না খেয়ে -শুয়ে -বসে টিভিতে করোনা সংক্রান্ত খবর অপেক্ষা রাজনৈতিক দিদিদাদাদের আত্মপ্রচার দেখে দেখে , নেটের যা কিছু গোপন গহ্বর তা আবিষ্কার করে, ফেবুতে বিপ্লব করতে করতে আর অন্যের বুদ্ধির আদ্যশ্রাদ্ধ সেরে ধাড়ি আণ্ডাবাচ্চাসহ হাঁপিয়ে উঠেছি আমরা।

সারা বিশ্ব যখন লকডাউনে ঘরের ভিতর দিন কাটাচ্ছে অস্থিরতায় ভয়ে, তখন পুলিশ করছেন ডিউটি। আবার অতি সচেতন আমরাই পাড়ায় , দোকানে , বাজারে ভিড় জমাচ্ছি। নিজেরাই নিজেদের ভালোটুকু বুঝতেই চাইছি না। এই ভয়ানক পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ আপ্রাণ লড়াই করছেন। মানুষকে নানাভাবে বুঝিয়ে ঘরমুখী করছেন। কখনো বা মানুষের একঘেয়েমি দূর করতে ওঁরা বিভিন্ন এলাকায় গান গাইছেন। সে দৃশ্য আমরা বাড়ির উঠোন ব্যালকনি থেকে দেখেছি। কিংবা দেখেছি সোশাল মিডিয়ার দৌলতে। একবারও কি ভেবেছি 'করোনা' পুলিশকেও আক্রমণ করতে পারে! ওঁরা কি বাড়ি ফিরতে পারছেন? ফিরলেও বাবা মা সন্তানকে ছুঁতে পারছেন? না, আমরা ভাবিনা। ভাবলে কি আর লকডাউন সফল করতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়!

যাঁরা প্রাণ বাজি রেখে করোনা মহামারীকে হারানোর বিশ্বযুদ্ধে দিনরাত লড়াই করে যাচ্ছেন তাঁদের মধ্যে পুলিশ বাহিনীও পড়ে। রোদে পুড়ে জলে ভিজে , দিনরাত এক করে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে প্রায়ই অর্ধ ভূক্ত থেকে, করোনা রোগীর মৃতদেহ পাহারা দিয়ে শ্মশান পর্যন্ত ডিউটি দিতে হয় পুলিশকে। পাবলিককে ভালো তথা নিরাপদে রাখার জন্য, মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে আমাদের মহল্লায় মহল্লায় এলে আমরাই ওদের হাত কেটে নিয়েছি, নারীপুরুষ নির্বিশেষে থান ইঁট ছাদ থেকে ছুঁড়ে মেরেছি ওদের উদ্দেশ্যে। মাথা ফেটেছে আহত হয়েছে তাতে কী? থানা আক্রমণ করেছি । কোমরবন্ধে আগ্নেয়াস্ত্র থাকা ডিউটি অফিসারকে শাসক দলের বাচ্চা ছেলেদের আক্রমণ থেকে প্রাণে বাঁচার জন্য ফাইলকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে দেখেছি। টেবিলের তলায় লুকিয়ে থাকতে, ঘরের দরজার পাল্লাকে শিরস্ত্রাণ করে আত্মরক্ষা করতে এই তো সেদিন দেখলাম! অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, বিদ্রুপ করা , গায়ে থুথু ছিটিয়ে হিরো সাজা এ তো আমাদের রাজনৈতিক দলের আনুগত্যের অধিকার! হবে নাই বা কেন বলুন ? পুলিশ দলদাস, ঘুষ খায় যে!

পুলিশ ধোওয়া তুলসীপাতা, নির্দোষ- নির্বিষ এমন দাবি করার দুঃসাহস আমার নেই। তার অনেক দোষ ত্রুটি আছে। তবে আর পাঁচটা চাকরি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এ চাকরি। আমরা ভুলে যাই এঁরাও মূলত এই কাজে এসেছেন জীবিকা নির্বাহের জন্য। মা বাবা , স্ত্রী পুত্র কন্যা পরিবার পালনের জন্য। হ্যাঁ, এসব ঝুঁকি আছে জেনে বুঝেই এসেছেন। পুলিশের চাকরি করে উর্দি নয়, রক্ত মাংসের মানুষ। পুলিশও মানুষ । ভিন্ জগতের জীব নয়। এই চাকরিতে কোন শনিবার রোববার নেই, সকাল দুপুর রাত্রি নিজের নেই, দুর্গোৎসব , ঈদ, বড়দিন, নববর্ষ নেই। অসুস্থ বাবা মা, ছেলে মেয়েদের অসুখ নেই ইচ্ছে মতো ছুটি নেই, আয়েশ করে বাড়ির খাওয়া নেই! এমনকি বাবা মায়ের শ্রাদ্ধে যাওয়ার অনুমতি অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আদায় করতে হয় কনেস্টবলকে। পুলিশের আবার পারিবারিক জীবনে কী? হাসি কান্না আনন্দ বেদনা, আত্মীয় স্বজনের কথা জানান দিতে নেই।

পুলিশকে সমাজের মধ্যে থেকে অহরহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হয়। মিশতে হয় অপরাধ জগতের সাথে। অধিকাংশ উপর স্যার নিচুতলার কর্মীকে মানুষ বলে মনে করেন না। এদের খাওয়া মেসে। শোওয়া তিন ফুট বাই সাড়ে ছফুট লোহার খাটে। গাদাগাদি করে। ব্যক্তিগত জিনিস খাটের তলায় ট্রাঙ্কে। পুলিশকে আমরা ঘৃণা করব আর তাঁরা গৌরাঙ্গ সেজে বুকে জড়িয়ে ধরবেন তাই কখনো হয়! আচ্ছা , জেলে যে অপরাধী শাস্তি ভোগ করছে তাদের কারা পাঠিয়েছে? উকিল বাবুর সওয়াল জবাব , মাননীয় বিচারকের নিখুঁত বিচারের পরেও জেল ভর্তি অপরাধী কেন? এই অপরাধী বাইরে থাকলে আমাদের কী অবস্থা হত ভেবে দেখবার জন্য অনুরোধ জানাই। কোন সরকারি অফিসে ঘুষ নেই? সব মাছে নোংরা খায় কই মাছের নাম যায় ! ঘুষ দেওয়া এবং নেওয়া দুই অপরাধ। কারা ঘুষ দেয়? অপরাধ করে পুলিশের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি হাতে পায়ে ধরা 'উদ্ধার করুন স্যার', টাকার বান্ডিল টেবিলের তলা দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া। থানার বাইরে বেরিয়েই- ' শালা '। এই তো আমাদের স্বভাব!

গলাবাজিতে ওস্তাদ বিনা মূলধনের রাজনৈতিক ব্যবসায়ীদের আমরা দেখতে পাই না ? অল্প সময়ের মধ্যেই আঙুল ফুলিয়ে কত বড় কলা গাছ বানানো যায় তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। ব্যতিক্রমীদের শ্রদ্ধা ও নমস্কার। অবশ্য এই প্রতিযোগিতা পাঁচ দশ বছরের নয়। এই প্রতিযোগিতা অনেক পুরনো। সে যাই হোক। ঐ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা কিছু না বলে কিছু পাওয়ার আশায় পায়ের তলায় বসে আনুগত্যের লেজ নাড়ি । এটা আমাদের বেশির ভাগের অভ্যাস। ঘুষ না দিলে তো ঘুষ নিতে পারবে না পুলিশ। আসুন আমরা সবাই আইন মেনে পুলিশের ঘুষখোর নামের কলঙ্ক মোচন করি। সমাজের বেশি অংশ আজ দুর্নীতি গ্রস্ত। এঁরা তো এখান থেকেই পুলিশ হয়েছে। সমাজ ভালো হলে পুলিশ ভালো হবে। পুলিশকে অনুরোধ , আপনাদের শাসক দল যেন দলদাসে পরিণত করতে না পারে। কংগ্রেস আমলে কংগ্রেসের, বামফ্রন্ট আমলে বামফ্রন্টের আর বর্তমানে তৃণমূলের এই পরিচয় থেকে বেরিয়ে না আসলে সমাজ সম্মান দেবে না। সব আমলেই অন্ধ আনুগত্যের না দেখালে প্রতিবাদীরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন যত্রতত্র বদলি করা হয়েছে। পা চাটার অন্যায় পদোন্নতি হয়েছে। এ ছিল আছে থাকবে যদি না পুলিশ মেরুদণ্ড সোজা করে হাঁটে।

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...