কবিতা - ত্যাগ ও ভোগ
কবিতা - ত্যাগ ও ভোগ
তাপসী ভালোবেসে আমআঁটি পুঁতেছিলাম । শিশু ভোরের হাসির মতো দুপাতা মেলে দাঁড়ালে চিবুকে হাত রেখে বলেছিলাম : 'বড় হও সোনা' ... বড় হয়েছে আজ সে । ডালময় ছায়ার মন্ত্র আর ফলের উপাচার নিয়ে দাঁড়িয়েছে তাপসী বালিকা ! গাছেরা কখনোই অবাধ্য নয় ।
সিক্ত শিউলী কাশ ফুটেছে কোপাই তীরে আসছে খুশির দিন, চোখের পাতায় হিমের পরশ বাজছে বেদন বীণ। শিউলী বাসর আজকে মেদুর পড়লো কাঠি ঢাকে, আসছে পুজো শারদ বেলায় উলুধ্বনি শাঁখে। আজকে সবাই আত্মহারা আগমনীর সুরে, বুকের মাঝে যে জন আছে আজ সে অনেক দূরে।। বছর ঘুরে আসছে পুজো…
রাখাল রাখালের কিছু নেই মাঞ্জা দেওয়া ঘুড়ী নেই, লাটিম নেই, বর্ষায় ভিজে ফুটবলের হৈচৈ নেই নতুন বইয়ের গন্ধ নেই, একটিও ভালো জামা নেই আরাম আয়েস আয়োজন কিচ্ছু নেই। রাখালের সূর্যোদয় আছে, নদীর জলে সিঁদুর লেপে ডুবে যাওয়া সূর্যের অস্তরাগ আছে জোনাক জলা রাতদুপুর আছে,কুঁড়েঘর আছে, রাখালের মা…
জীবন লিপি ১.চুপ করো,নীরব হওনিজেকে গুটিয়ে ফেলো শামুকের মতো,তারপর সাবধানে হাঁটা দাও পথে,রাস্তা যে অফুরন্ত খানা-খন্দে ভর্তি। ২.অতো বেশি ভেবোনা,লাভ নেইশক্ত হও, আরও শক্ত হওতৈরী হতে থাকো আগামীর জন্যমানুষ চিরকালই ওইরকম!নিজের কথা ভাবো, স্বার্থপর হওমনে রেখো, বিশ্বাস আজকাল পদবী মাত্র। ৩.চিনতে শেখো, মানুষ…
বৃষ্টি হওয়ার বয়সে সেই যেবার কাঁসাই নদী বান ডাকল আকাশে, আমি চুপিচুপি উড়িয়ে দিয়েছিলাম, আমার চওড়া ছোটবেলার ছাতাটা। বড় হব বলে। মুহুর্তে ট্রেনলাইন বেয়ে ঝমঝম করে ছুটে এসেছে বৃষ্টি। অবিরাম, মুষলধারা....তারাদের এক ফুঁয়ে নিভিয়ে কত সহস্র জোনাকি জন্ম; ঘোলা নীল চোখ পৃথিবী বলে মেয়েটা ভিজছিল আমার…
দিবসে নয়, দিনে আমরা বাড়ির উঠোনে ভেজা শাড়িরফোঁটা ফোঁটা জল ,আর বাসনের ঝনঝন শব্দ।হ্যাঁ, আসছি এক্ষুনি দিচ্ছি.......এসবের মধ্যে থেকেও এখন আমি হয়েছি মুক্ত।চলচ্চিত্রের কাহিনী আমাকে নিয়েটলিউডে বলিউডে আমি থাকি টক্কর দিয়ে।লেখকের কলমে আমি সাহসিনী ,আমি স্নেহময়ী, আমি আদরিনিকবিদের উদাহরনে আমি…
আয়ু , যুদ্ধ পাহাড়ের গলায় বৃষ্টিভেজা লাঙল সাঁওতালের ছায়া পড়েছে আয়ুষ্কালে তৃষ্ণা ভাঙে তৃষ্ণার ওঙ্কার খুঁজে নিতে দাও রূপ - যুদ্ধ ; আণবিক বেঁচে থাকা । কূলে পোড়েন হাঁস , টানা ব্যস্ত পশ্চিমের পুঁজে এই নিদ্রা তোমার না …
পার্ক স্ট্রিট জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে তোলা ফোর পয়েন্ট সিক্স বিলিয়ন বছর আগে এই গভীরতম মহাবিশ্বে পরিষ্কার ইনফ্রারেড ছবির মতো নিজেকে খুঁজে দেখো তুমি আমার ভিতর জ্বলজ্বলে টুনি বাল্বের মতো একদিন একটি ধ্রুবতারা কিংবা শুকতারা হয়ে তোমায় খুঁজে পাবে। লুব্ধক তারার মতো…
কবিতা - ত্যাগ ও ভোগ ত্যাগ আর ভোগের মাঝে পড়ে বিভ্রান্ত জগৎ সংসার। কেউ কেউ উপার্জন করে, কেউ আবার তা ভোগ করে। ভোগও যে এক ললাট লিখন। কে ই বা তা মুছতে পারে। ত্যাগে আছে নির্মল প্রশান্তি। ভোগের মাঝে জীবনের উচ্ছৃঙ্খলতা। ভোগ শুধু ভুগতে শেখায়। আর ত্যাগ জীবনের ক্ষত সারায়। জীবনকে…
ম্যাজিক লন্ঠন বাড়ুজ্জেদের বাড়ি থেকে ডাল ফোঁড়নের গন্ধ ভেসে আসে। ধুনুরি, চাবিওয়ালা, হেঁকে যায়, তাঁদের কেউ ডাকে না তেমন এখন। কল্পনায় নিবিড় হতে পারলে তোমায় গন্ধে অনুভব করা যায়। একলা মানুষ তায় অলসতায় কাঁথামুড়ি… মুখোশ ছাড়া, শীতের জড়তা নিয়ে, রাতপোশাকে ঢিলেঢালা… কী যেন লিখছি… কাঁপা কাঁপা নদীজলে…
কবিকে প্রেমিক হতে নেই আজ আমার অসুখের পান্ডুলিপির মৃত্যু হল সারা দিন কাঠ কুপাচ্ছি কাঠুরিয়া হাতে কুড়ুলের ইস্পাত থেকে কান্না এসে ভিজিয়ে দেয় সেই কাঠ। শ্মশানের নিরবতা। মুখে কবিতার মন্ত্র রাখি। আমার দাহ ছাই মেখে বিকৃত হাওয়া হেসে গেছে শ্রাদ্ধ বাড়ির দিকে স্মৃতিময় ছড়ানো খই থেকে…
শিষ্টাচার তৃতীয় নয়ন ছিল না এত ভস্ম এল কোথা থেকে কোথা থেকে এল এই অশরীরী আগুনবাতাস ভেলাঘর পুড়ে যায় স্বর্ণকমল সলিলে সবকিছু ফিরে আসে জোয়ারে, অহঙ্কারও টুপ করে খসে পড়ে বাঘ রঙা হেতাল বল্কল মাঝেমধ্যে মনে হয় এইসব তিন পয়সার পালা আর্তনাদ শুনি এক বায়বীয় বাঁকুড়া ঘোড়ার তখন…
অ্যামোনিয়াম জিভ ও গর্ভবতী নাশপাতি বাগানমাটির ফাটল ভেদ করে আসার পর প্রতিটি পঞ্চম বর্ণের রৈখিক বন্ধন পুরুষদের হাতে একটি ধারালো তরবারি , দিব্য বিমান ও ১৩ জোড়া বায়বীয় চোখ থাকে নিজেদের হত্যা করার জন্যএকটি পুনর্জন্ম পেরিয়ে যাওয়ার পর তিন ফুট…
স্বপ্ন তোমার সঙ্গে দেখা হয় আমার, মাঝে মাঝে, গভীর রাতে, যখন আমি ঘুমিয়ে পড়ি, তখন.. তুমি এসে বসো আমার চোখের পাতায় তোমার এলোমেলো চুল, ত্রস্ত আঁচল..... তুমি ঝুঁকে থাকো, আমার বুকের উপর মুখের উপর তোমার গায়ের গন্ধ.. তোমার ঘন নিশ্বাস.. ........ গাঢ় করে আমায় তুমি ভোরের শিশিরে মন…
ভারসাম্য লন্ডনেই এবার পাকাপাকি ভাবে রয়ে যাবে সুপর্ণা। নিয়তি যখন বরাতে লিখেছেন হিম যাপন। আগের মত আর বৃষ্টি আসেনা আকাশ ঝেঁপে, ভাসেনা নকশা ধরে কোনো প্লাবন। এখোন সবেতেই শুধু ভারসাম্যের কৌতুক, সকালে একঘন্টা মেঘ করলে বিকেলেও এক ঘন্টা মেঘ করতে হয় । আগে কেমন বৃষ্টির অর্থ ছিলো চেরাপুঞ্জি, আর এখোন…
সাম্যের কবি চুরুলিয়ার কাজীর ঘরের দুষ্টু ছেলে দুখু, পাড়ায় পাড়ায় বেড়িয়ে শুধু হারায় সময় টুকু। জানতো কে আর এই ছেলেটি হবে বিরাট কবি, গল্প ছড়া গান কবিতা লিখবে সে তো সবই। বিপ্লবী ভাব থাকবে লেখায় চিনবে লোকে তাকে, মনের ভেতর সেই কবিতো রঙিন স্বপ্ন আঁকে। সেই কবিকে সবাই চেনে বাংলার বুলবুল, সাম্যের কবি বিদ্রোহী কবি কবি…
নিজেকে পড়া হয়নি চোরা বালির মতোই হারিয়ে যায় সমস্ত চেষ্টা। বৈরাগ্য আসেনি বলে বৈষ্ণব পদাবলীছোঁয়া হয়ে ওঠেনি। আজও নিজেকে পড়া হয়ে উঠলো না! নিজেকে পড়ার মতো জ্ঞানার্জনে অক্ষম। কখনও নাস্তিককেরমুখে ঠাকুরদেবতার নাম শুনেছো? ভক্তি মার্গে হাঁটা মানুষের সঙ্গে মতেরমিলন ঘটেছে কোনদিন? চোখে…
হলুদ পাখি তোমার কাছে এলে মনে হয় কোন এক সরোবরের ধারে দাঁড়িয়ে আছি। তোমাকে ছুঁলে তুমি-ই শরত সরোবর হয়ে যাও। তোমার কাছে এলে মনে হয় কোনএক বৃক্ষের তলায় …
"পদ্মা সেতু" সভ্যতা গুড়িয়ে দিয়ে সংস্কৃতি গড়ে উঠছে, গড়ে উঠছে নূতন স্থাপত্য, নূতন দিনলিপি প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে পৃথিবীতে টিকে গেছে মানুষ স্রোতস্বিনী প্রমত্তা কীর্তিনাশা পদ্মার জলে উঠেছে গড়ে সভ্যতার নূতন স্মৃতি স্মারক, অপূর্ব সংস্কৃতি সাপের মতো সর্পিলাকার স্বপ্নের বাঁক, উঁচু নিচু বাঁক নিয়ে নেমেছে জলে। জলের রাশি ছুঁয়েছে সেতুর…
আমাদের কথা
আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...
কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...
ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...
কবিতা, গল্প, কবিতা বিষয়ক গদ্য পাঠাতে পারেন ইউনিকোডে ওয়ার্ড বা টেক্সট ফর্মাটে মেল করুন [email protected] ।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- www.mohool.in এ প্রকাশিত লেখার বিষয়বস্তু ও মন্তব্যের ব্যাপারে সম্পাদক দায়ী নয় ।