বারান্দায় দাঁড়িয়ে সবুজ গাছগাছালির সৌন্দর্য্য দেখছিলাম। সেখানে এসে লুকোচুরি খেলছে কয়েকটি চড়ুই-টুনটুনি তারই মাঝে এসে উঁকি মারল একটি গিরগিটি। পিটপিট করে এগোচ্ছে ওপরের দিকে। ওর ক্ষণে-ক্ষণে রঙ বদলানোর ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং।
সরকার বদলেছে সদ্য। অমনি অতীব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল রঙ-বদলের ব্যাপারটা। টিভি, খবরের কাগজ খুললেই আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি। ক্ষমতার লোভে জার্সি বদলে নিচ্ছেন তাবড় লোকেদের অনেকেই। কবি-শিল্পী-সাহিত্যিক-খেলোয়াড়-সেলিব্রিটিরা। সঙ্গে অলিগলির দাদারা-দিদিরা এই নিয়েই ধুন্দুমার চলছে চতুর্দিকে। মারামারি-খুনোখুনি। সঙ্গে হুমকি, সন্ত্রাস...
বউটি কানের ধারে এসে ফিসফিস করল আচমকা। ওই যে, বাইরে কারা দলবেঁধে দাঁড়িয়ে। তোমার খোঁজ করছে। কী সব ফুট কাটছে। হাসাহাসি করছে।
জানালায় উঁকি মেরে আমার বত্রিশ ইঞ্চির বুকটি ধড়াস করে উঠল। ছেলেগুলিকে চিনি আমি। আপাতত শাসকদলের সহায়-সম্পদ এরা। দিনের বেলা এ পাড়া-ও পাড়া দাপিয়ে বেড়ায়। হেলে-ঢোঁড়াদের ধরে দাবড়ায়, হম্বিতম্বি ছাড়ে, তোলা তোলে। সন্ধে গড়ালে জাত নেশুড়ে।
কিন্তু আমার কাছে কেন ? কী বলতে এসেছে ? আমি অন্য পন্থী, ওরা জানে।
তাই কড়কাতে এল ? নাকি তোলা তুলতে ? আমি কী বলবো উত্তরে ? সাহস দেখাবো ? নাকি গিরগিটি হব ? কে বড়ো আমার কাছে- এদ্দিন কাঁধে বওয়া নীতি-আদর্শ; নাকি আমার স্ত্রী-সন্তানের নিরাপত্তা ?
এমন ভাবতে ভাবতে একবার গিরগিটিটার দিকে, একবার ছেলেগুলির অচেনা মুখগুলোর দিকে তাকাই আমি। শেষে গিরগিটির মুখে থুক ছিটিয়ে বাইরে পা বাড়াই !