মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায় সন্দীপের। আজকাল প্রায়ই এমনটি হয়। চারমিনারের প্যাকেট মাথার কাছ থেকে নিয়ে চলে যায় পূর্ব দিকের বারান্দায়।
বাইরে প্রচন্ড ঝড়-ঝঞ্ঝা সঙ্গে বজ্রপাত। বিদ্যুৎ-এর ঝলকানি মাঝে-মাঝে জানলার কাঁচ ভেদ করে সুলগ্নার শরীরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।ইদানীং প্রায়ই সুলগ্না অফিস থেকে রাত করে ফেরে কৌশিক বাবুর গাড়ীতে। কিছু বললে অফিসে কাজের চাপ বলে এড়িয়ে যায়।
সন্দীপের মনে নানা প্রশ্ন উঁকি দেয়। বেশী কিছু জিজ্ঞেস করেনা, পাছে ভালোবাসায় সন্দেহ নামক ছাঁড়পো বাসা বাঁধে। সুলগ্নার সাথে কথাও এখন কম হয়,শারীরিক সম্পর্ক সে-তো অতীত। চারমিনারেে লম্বা ধোঁয়া ছেড়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে সন্দীপ।
রবিবারেও ল্যাপটপ নিয়ে বসে অফিসের কাজে। সন্দীপের আয় বলতে ক্যানভাসের ছবি বিক্রি করা। একসময় রাত জেগে সুলগ্নার ছবি আঁকতো। সুলগ্নাও শরীরে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ক্যানভাসের সামনে দারাতো।সন্দীপ নিজের তুলিতে ফুটিয়ে তুলতো শরীরের ভাঁজ গুলোকে।
সত্যিকি সুলগ্নাা ওকে ভুলতে পারে? সুখ-স্মৃতি আর আজকের দিনগুলো কিছুতেই মেলাতে পারছেনা। বজ্রপাত আর বিদ্যুৎ-এর ঝলকানির মধ্যে ঠোঁটে আটকানো চারমিনারের ফুলকি বড্ডই ম্লান। বৃষ্টির ছাঁটে সন্দীপের মুখমণ্ডল সিক্ত। এতোবড়ো পৃথিবীতে বড্ড একা।সেই একাকীত্বের জোয়ারে ভাসিয়ে দিলে ক্ষতি কি ? তবুওতো সুলগ্না ভালো থাকবে।
অকস্মাৎ নরম হাতের ছোঁয়া সন্দীপের কাঁধেে। হলুদ আলোর আভায় সুলগ্নার মুখখানি হরিদ্রাভ। লাল ঠোঁটখানি কাঁপিয়ে নরম সুরে বললো 'ঘরে চলো'। মুখোমুখি দুজনে আর বৃষ্টিভেজা আকাশ।