procchod heontor mohool

পালকের ভাষা ।। অমিত মাহাত



বাঁশ ঝাড়ে শালিখ বগলার ডেরা। সরফুচি আর বুড়ি মৌকাল পাখিটিও থাকে। আমার বরাবরের রাত জাগা অভ্যেস। ভোরের দিকে ঘুমোলে  ব্যালা উঠার আগে বিছানা ছাড়া মুশকিল।

রাঁধাশাল থেকে তখন  মায়ের গলা ভেসে আসত।

-'' নিগৈতরার এতনা আলিস ক্যানে! কাওয়া বনি ডেঁঙ্ঘে গেল  ছাইন্যের উপর দি।''

ঘুমন্ত মানুষের উপর পাখপাখালি উড়ে গেলে নাকি সে উড়নচণ্ডী হয়। পায়ে শেকল পড়েনা। পাখিদের একটি আশীর্বাদ-পালক খসে পড়েছিল কপোত টাঁইড়ে।

পালকটি কুড়োতে গিয়ে কুড়োলাম ধুলোমাখা জীবন। বিচিত্রবর্ণ। ধুলো পায়ের  অলিখিত পদাবলি। একে একে জলস্পর্শ পায়। রাধাভাব জন্মায়। কৃষ্ণজন্মকথা  লেখা হয় পালকে।

পালকটি আমার আগে কুড়িয়ে নিলেন কবিবর। কালিদাস। তার আগে অবশ্য রত্নাকর দস্যুর হাতে সে পালক পুনরুজ্জীবন চেয়ে বসে। প্রাণঘাতক অবশেষে  মৃতশরীরে প্রাণ ফিরিয়ে আনলেন। বন্দিনী বানালেন।

ওই শোনো। পালক কী বলতে চায়। অশোকবনে বন্দিনী সীতা কেঁদেছিল কি না। শোনো। জটায়ু তার ডানা খুইয়েছিল। আর তার ডানা থেকে খসে পড়ছিল এক একটি পালক। 

এভাবেই একদিন পৃথিবী মাতল পাখি শিকারে।  ব্যাধকাল। পাখিদের অনাবিল ওড়াউড়ির দিন। আর রইল না।  পাখিটি আহারের পরে পালক   কালকেতুর তিরের শোভা বাড়াল।

আপনা মাংসে হরিণা বৈরি  এই বোধ  ছড়িয়ে পড়ল তারপর ।

একদিন বিদ্যা সুন্দরের উদ্দেশ্যে  একটি আগামী সম্ভাবনার কথা লিখলেন। আড়ালে থেকে তা দেখছিলেন রায় গুনাকর। ভারতচন্দ্র। বিদ্যা  পালকে লাক্ষারস চুবিয়ে   লিখলেন ''-হে প্রাণসখা সুন্দরস্বামী, একটি কুমারী সম্ভাবনায় আশঙ্কিত আমি। সে রাত্রে আপনার সাথে রতিবিহারের পরে আমি তৃপ্ত। আমার বাসনা চতুর্গুণিত হল। লিপ্ত হলাম    আবারও।বিপরীত বিহারে আপনাকে নারী রূপে আর আমি পুরুষ রূপে।  কিন্তু বিপদ সম্ভাবনা দেখা দিল চতুর্থ সপ্তাহের অবসানে। গর্ভলক্ষণ অতি প্রকট হয়ে উঠেছে আমার। ''


ভারতচন্দ্রের চঞ্চলমতিতে বড় অস্থিরতা দেখা দিল তারপর। বিদ্যার কোমল হস্তের পালকটি তিনি হস্তগত করলেন। তারপর। লিখতে শুরু করলেন বাংলায়। বিদ্যা ও  সুন্দরের অপূর্ব  শরীরী আখ্যান।  কাব্য।

তারপর পালক ফিরল পাখির শরীরে।

 

 

কবি প্রণাম : হে অন্তর



Card image




কবি প্রণাম : হে অন্তর   দেখেছেন : 1656

‘চিরসখা, ছেড়ো না মোরে..’ ।। আনন্দরূপ নায়েক
Anandrup Nayek।। আনন্দরূপ নায়েক

    পুরাতন বিকেল পেরিয়ে হলুদ ফুলে ভরা বাবলা গাছের সারি। চলে যাওয়া মাটির রাস্তাটি পায়ে পায়ে ঢুকে পড়ে প্রিয় বাড়িটির ভেতর। সাঁঝ নেমে আসে। দখিনের বায়ু বয়। মৃদু আলো জ্বলে ওঠে। এক একদিন বাবা তার হারমোনিয়াম নিয়ে বসে। গান গায় একের…

May 7, 2020
Card image




কবি প্রণাম : হে অন্তর   দেখেছেন : 1668

আমাদের রবীন্দ্রনাথ ।। সোমনাথ শর্মা
Somnath Sharma ।। সোমনাথ শর্মা

  রবীন্দ্রনাথ। এই ভদ্রলোক সম্পর্কে আমাকে লিখতে হবে! কঠিন কাজ। ও কাজ আমি করব না। আমি যাদের চিনি তাদের নিয়ে লিখব। রবীন্দ্রনাথকে আমরা কত ভালোবাসি তার সপ্রমাণ ব্যাখ্যায় যাব খানিকটা। একজন লেখক বা যে কোনো পেশার সৎ লোক মনীষী হয়ে ওঠেন তাঁর…

May 7, 2020
Card image




কবি প্রণাম : হে অন্তর   দেখেছেন : 3768

ঘরের ডাক ।। কেশব মেট্যা
Keshab Metya ।। কেশব মেট‍্যা

  ‘পিসেমশায়! আমি কি ঐ উঠোনটাতেও যেতে পারব না?' –এই শব্দবন্ধ আজ  যেন বুকের মাঝে বারংবার ছ্যাঁৎ করে ছুঁয়ে যাচ্ছে । অমলের মতো কতো কোমলমুখের এখন এই একটাই আর্তি। দেওয়াল তোলা বর্গফুটের কারাগারে অসুখভয়ে বদ্ধ শৈশব। নির্ঘুম রাস্তার বুকেও শ্মশানের নিস্তব্ধতা।  নিজের…

May 7, 2020
Card image




কবি প্রণাম : হে অন্তর   দেখেছেন : 2809

ব্যক্তিগত অন্তরকথন ।। অমিত মাহাত
Amit Mahata ।। অমিত মাহাত

    মা শালপাতা তুলে আনত বন থেকে। সেলাই করত। অন্যের বাড়িতে কখনও ধানসেদ্ধ চাল পাছড়ানো থেকে কাজে ভোজে ছোঁচগোবর সাফসুতরা। আমার তখন অতি অল্প বয়স। মা কাজে চলে যেত। সকালে। ফিরত সাঁঝে । আমার হাতে দেদার সময়। কীভাবে যে খরচা হত …

May 7, 2020
Card image




কবি প্রণাম : হে অন্তর   দেখেছেন : 3289

‘চিরটাকাল সঙ্গে আছে জড়িয়ে লতা’ ।। প্রিয়াঙ্কা
Priyanka ।। প্রিয়াঙ্কা

      শব্দের অভাব বোধ হয়, সমুদ্রের বা আকাশের মতো অনন্তের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে। তাঁকে নিয়ে কিছু না লিখতে যাওয়া মানে ঠিক তাই। যাকে বাঙালীর বেশ বড় একটা অংশ একটা অলিখিত ব্যাকরণ বইএর ভেতর রেখে দিয়েছে।  স্বরলিপির অক্ষরের মধ্যে রেখে দিয়েছে। পাঞ্জাবী…

May 7, 2020
Card image




কবি প্রণাম : হে অন্তর   দেখেছেন : 3163

যে-অন্ধ বৃষ্টি আনতে যাচ্ছে ।। সুকান্ত সিংহ
Sukanta Sinha ।। সুকান্ত সিংহ

    আমার কিছু অনিবার্য বিষণ্ণতা ছিল। আমার কিছু অনিবার্য বিপন্নতা ছিল। আমার কিছু অনিবার্য আকুলতা ছিল। ছিল। আছে। থাকে। হ্যাঁ, আমার কিছু অনিবার্য আশ্রয়ও ছিল। সেই যে শিলাবতীতে নৌকো বাঁধা থাকত, আমি বাসের জানলা দিয়ে দেখতে পেতুম, তারা দুলছে জলের ঢেউয়ে…

May 7, 2020
Card image




কবি প্রণাম : হে অন্তর   দেখেছেন : 2111

বন্ধু, রহো রহো সাথে...।। পাপিয়া ভট্টাচার্য
Papia Bhattacharya ।। পাপিয়া ভট্টাচার্য

     মনে হচ্ছে অনন্তকাল ধরে এরকম স্থবির একটা সময়ের ভেতর আছি। দিন মাস সব গুলিয়ে গেছে, ঝিমিয়ে কাটছে সময়। রোজ ভাবি, আজ যেন কী বার!  কত তারিখ! কিছুতেই মনে আসে না  সহজে। তার মধ্যে এই একটা সপ্তাহ  যেন  একদম…

May 7, 2020
Card image




কবি প্রণাম : হে অন্তর   দেখেছেন : 3435

যার নাম রোদ ।। লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
Laxmikanta Mandal ।। লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল

           'তবে পরানে ভালোবাসা কেন গো দিলে              রূপ না দিলে  যদি বিধি হে ' -  এ আক্ষেপ নিজের কাছেই । ভালোবাসা চাই  - ভালোবাসা চাই  - ভালোবাসতে চাই - ভালোবাসতে চাই , আজ চিৎকার করে বলতে হচ্ছে । …

May 7, 2020
আরও পড়ুন

কবি প্রণাম : হে অন্তর- সংখ্যায় প্রকাশিত লেখা সমূহ



একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...