যে-অন্ধ বৃষ্টি আনতে যাচ্ছে ।। সুকান্ত সিংহ

sukanta heontor mohool

 

 
আমার কিছু অনিবার্য বিষণ্ণতা ছিল। আমার কিছু অনিবার্য বিপন্নতা ছিল। আমার কিছু অনিবার্য আকুলতা ছিল। ছিল। আছে। থাকে। হ্যাঁ, আমার কিছু অনিবার্য আশ্রয়ও ছিল। সেই যে শিলাবতীতে নৌকো বাঁধা থাকত, আমি বাসের জানলা দিয়ে দেখতে পেতুম, তারা দুলছে জলের ঢেউয়ে, কখন যেন মনে মনে বলছি, নদীর ঘাটের কাছে নৌকো বাঁধা আছে, নাইতে যখন যাই দেখি সে জলের ঢেউ-এ নাচে। সেই থেকে যখনই কোনো ঢেউ এসেছে, টলোমলো হয়েছে নৌকো, তখনই মনে হয়েছে সেই ঢেউ হয়তো কোনো দূরের টান! অনেক দূরের! আমার কিছু অনিবার্য দূর ছিল।
রবীন্দ্রনাথ আমি অনেক পরে কিছু কিছু বুঝেছি, যে রবীন্দ্রনাথ সময়ের, সমাজের। সেখানে অনেক কিছুই প্রয়োজনের। অনেক কিছুই প্রয়োগের। প্রতিভারও বটে। সে রবীন্দ্রনাথ আমি পাই নানান জনের থেকে। নানান দিকের থেকে। তাকে তত্ত্ব দিয়ে, তথ্য দিয়ে খুঁড়ে দেখার আয়োজনে কোথাও ঘাটতি নেই। নিক্তি মেপে দেখাও কম হয়নি। বাটখারা পাল্টে পাল্টে, তীব্র আলোর নীচে ফেলে, স্বীকার আর অস্বীকারের দ্বন্দ্ব জাগিয়ে রেখে দেখার আয়োজনও কমেনি।
আরেক রবীন্দ্রনাথ, যখন কোনো আলো নাই, অন্ধকারও নাই, বিষাদ নাই, আনন্দও নাই, কিংবা এরা সবাই আছে, তখনও ছুঁয়ে থাকা টের পাই, আলো থাকুক নাই থাকুক, বিষাদ থাকুক নাই থাকুক, সে রবীন্দ্রনাথ, টের পাই। স্থিরে যখন কেঁপে উঠি, টের পাই। মেঘ জমে ওঠা দিনগুলোতে টের পাই। যাবতীয় দ্বিধা যখন রুদ্ধ করে পথ, টের পাই। টের পাই সে রবীন্দ্রনাথ।
এক জীবনে শুধু বেঁচেবর্তে থাকাই হল। ভ্রম আর ভ্রমণের মাঝখানে অদৃশ্য দেয়ালের অস্তিত্ব যে আছে, তাকে বুঝতেই সময় পেরিয়ে যায়। সেই যে রেল ইয়ার্ডের পাশে কাঞ্চন গাছটি ছিল, তার সাদা ফুলের উপর নেমে আসত শেষ বিকেলের আলো, সে আলোটি আরেকবার দেখতে চাওয়া অন্ধকে কেউ হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে। যে-অন্ধ বৃষ্টি আনতে যাচ্ছে দূরের পাহাড় থেকে, তাকে হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে কেউ। ভেতরপানে।
সেই হাতটিই রবীন্দ্রনাথ।

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...