প্রতিশোধ
ধনঞ্জয় দত্ত
'এখন বিশ টাকা দিবেন বাবু...।' ছাল ওঠা মেঝের মতো নোংরা খসখসে চওড়া হাতটা পেতে হাঁপ ধরা ভাষায় কথাটা বলল লোকটা। সদ্য সাজিয়ে তোলা সারিবদ্ধ ইঁটের স্তুপটার দিকে তাকিয়ে গলাটা বিকৃত করে বলে উঠলাম--'আচ্ছা কেলোর কীর্তি দেখাচ্ছিস মাইরি! কাজই শেষই হল না, হাত পাতচ্ছিস ?...আজ হবে না, ভাগ। কাল এসে সব ইঁটগুলো বয়ে দিবি, টাকা দিয়ে দেব।' 'না বাবু দেন না বিশ টাকা। ...বাকি টাকাগুলো না হয় দুদিন পরেই দিবেন। ...দেন না বাবু। ছেলেটাকে আজ সাঁঝে একবার ডাক্তার দেখাব। পাঁচ বছরের ছেলেটা আমার সারারাত কেশে কেশে সারা। শরীরটা যেন আগুনের পারা গরম। ... ' রয়ে সয়ে টেনেটেনে কথা কটা বলেই চললো শ্রমিকটা। মেজাজটা ঠিক ছিল না। আজ লটারিতে একটা টাকাও জিততে পারিনি। উল্টে অনেক গুলো টাকা খসে গেছে। আর এদিকে লোকটা ইঁটগুলো অর্ধেকও আনতে পারেনি,অথচ টাকা চাইছে ! রাগে আমার মাথাটা আরো গরম হয়ে গেল। তাই চলে যাবার আগে চট্ করে ঘুরে রুঢ় ভাষায় বলতে গেলাম--"দূর হ..শাআআআআ..." কথাটা সম্পূর্ণ হল না,চোখের নিমেষে একটা থান ইঁটে হোঁচট খেয়ে পড়লাম গিয়ে লোকটার হাতে সাজানো ওই ইঁটের গাদায়। জোর আঘাত পেলাম। মনে হল ওই লোকটা নয়, কিন্তু কে যেন প্রতিশোধ নিতেই ঠেলে ফেলে দিল আমাকে।।